Wellcome to National Portal
কৃষি তথ্য সার্ভিস (এআইএস) গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার
Text size A A A
Color C C C C

মুজিববর্ষে-কৃষিবিদ দিবস : তাৎপর্য ও অঙ্গীকার

কথাসূত্র
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবর্ষ ২০২০ বছরটি ‘মুজিববর্ষ’ হিসেবে উদ্যাপনের রাষ্ট্রীয় ও নাগরিক আয়োজন চলছে। এ আয়োজনে বঙ্গবন্ধুর জীবন সংগ্রাম, রাজনৈতিক মতাদশর্, স্বাধীন বাংলাদেশ সৃষ্টির     লক্ষ্য-উদ্দেশ্য তথা প্রত্যাশা, প্রাপ্তি ও ভবিষ্যৎ করণীয় বিষয়ে বিপুল কার্যক্রম হাতে নেয়া হয়েছে। এ সব কার্যক্রম বাস্তবায়নের মধ্য দিয়ে বর্তমান প্রজন্ম যেমন    আত্মনিরীক্ষণের সুযোগ পাবে এবং কর্তব্য স্থির করবে তেমনি নতুন প্রজন্ম জাতির পিতার মানব প্রেম, দেশ প্রেম, অন্যায় অত্যাচার- নিপীড়নের বিরুদ্ধে আপোসহীন সংগ্রাম, অপরিমেয় সাহস এবং বিপুল ও মহীয়ান আত্মত্যাগ সম্পর্কে জানতে পারবে। সেই সাথে এই দেশ ও এদেশের জনগণের কল্যাণে সূচিত নানা উদ্যোগ সম্পর্কে অবহিত হবে। এভাবে ‘মুজিববর্ষ’ উদ্যাপন সমগ্র জাতিকে ঐক্যবদ্ধ করে আগামী দিনের উন্নয়ন অভিলক্ষ্যসমূহ অর্জনে ব্রতী হতে অনুপ্রাণিত করবে। আমরা এদেশের কৃষিবিদ সমাজ আমাদের বোধে ও বিশ্বাসে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের অবদান ও অনুপ্রেরণা  চির অটুট রাখতে তাঁকে স্মরণ করব-নানা আয়োজনে-যার অন্যতম হলো-কৃষিবিদ দিবস উদ্যাপন।


কৃষিবিদ দিবস ও তার ঐতিহাসিক তাৎপর্য
বাংলাদেশ কিম্বা বিদেশি কোন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে - কৃষি, পশুচিকিৎসা, পশুপালন, কৃষি অর্থনীতি, মৎস্য, কৃষি প্রকৌশল এমনকি কৃষি বনায়ন ইত্যাদি বিষয়ে ¯œাতক ডিগ্রি অর্জনকারী বাংলাদেশের পেশাজীবীরা কৃষিবিদ হিসেবে পরিচিত। প্রকৌশল বা চিকিৎসক পেশায় নিয়োজিতদের মতো কৃষিবিদরাও বিশেষজ্ঞ পেশাজীবী গোত্রের অন্তর্ভুক্ত। কৃষি প্রধান বাংলাদেশের শিক্ষা, গবেষণা, সম্প্রসারণসহ নানামুখী উন্নয়ন কাজে নিয়োজিত থেকে জনগণের জন্য খাদ্য নিরাপত্তার বলয় রচনা ও সুরক্ষা এবং সার্বিকভাবে অর্থনৈতিক উন্নয়নে প্রভূত অবদান রাখার সুবাদে কৃষিবিদগণ এদেশে আজ এক মর্যাদাবান পেশাজীবী হিসেবে স্বীকৃত। কিন্তু নিরেট সত্য এই যে, এই মর্যাদা অর্জনের পথ মোটেই মসৃণ বা সুগম ছিল না। একদিকে  লাগাতারভাবে কৃষি উৎপাদন বৃদ্ধি ও উৎপাদন ব্যবস্থার বিকাশ ও উন্নয়নে মেধা, দক্ষতা ও সৃজনময় কর্মকুশলতার নিরবচ্ছিন্ন প্রয়োগজনিত চ্যালেঞ্জ অন্যদিকে পেশাজীবী হিসেবে সামাজিক ও রাষ্ট্রীয়ভাবে মর্যাদা অর্জন ও রক্ষার নিরন্তর লড়াইয়ের পথ ধরেই এগোতে হচ্ছে কৃষিবিদদের।


১৯৬১ সালে পূর্ব পাকিস্তান কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, ময়মনসিংহ এর প্রতিষ্ঠা এবং ষাটের দশকের মধ্যভাগে এ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদের ২ দফা ভিত্তিক আন্দোলনের মাধ্যমে এ লড়াইয়ের সূচনা হয়। এ লড়াইয়ে সর্বশক্তি দিয়ে যুক্ত হন ঢাকাস্থ তৎকালীন তেজগাঁও কৃষি কলেজের (বর্তমান শেরে বাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়) ছাত্ররা।
দুই দফা দাবির অন্তর্ভুক্ত ছিল
*কৃষি গ্রাজুয়েটদের সরকারি চাকরিতে প্রবেশকালে গেজেটেড পদমর্যদা প্রদান।
*সমমর্যদার পেশাজীবীদের সাথে একীভ‚ত বেতন স্কেল ও সংগতিপূর্ণ টেকনিক্যাল পে প্রদান।
এই দুই দফা বাস্তবানের দাবিতে ১৯৬৪ সালের ১৭ জুন থেকে ছাত্র ধর্মঘট শুরু হয় যা লাগাতারভাবে ১৭২ দিন অব্যাহত থাকে। ৪৭ জন ছাত্র ও ৫ জন পথচারীকে এ আন্দোলনের দায়ে দীর্ঘ দিন জেল খাটেন। মলয় বৈশ্য নামে একজন ছাত্রকে আত্মাহুতি দিতে হয় এ আন্দোলনে। বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিষ্কার করা হয় ৪৭ জন ছাত্রকে। এই অবস্থায় ১৯৬৪ সালের ডিসেম্বর মাসে ময়মনসিংহ শহরে সুধীসমাজ, অভিভাবকবৃন্দ ও প্রাদেশিক সরকারের প্রশাসনের সাথে চলমান আলোচনার এক পর্যায়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও সরকারের উচ্চ পর্যায় থেকে ছাত্রদের বহিষ্কার আদেশ প্রত্যাহার ও তাদের দাবি মেনে নেয়ার ব্যাপারে নমনীয় মনোভাব পোষণ করায় ৭ ডিসেম্বর ১৯৬৪ সালে ১৭২ দিনের ছাত্র ধর্মঘটের অবসান হয়। কিন্তু মূল দাবি অর্জিত না হওয়ায় ছাত্রদের মধ্যে প্রবল ক্ষোভ ও দুই দফা আদায়ের সংগ্রাম অব্যহত থাকে। ১৯৬৯ সালে দেশজুড়ে সূচিত ছাত্রদের ঐতিহাসিক ১১ দফা দাবিভিত্তিক আন্দোলনের সাথে কৃষি শিক্ষার্থীদের ২ দফা দাবিও অন্তর্ভুক্ত হয়। যা এ সময়ে পূর্ব পাকিস্তানের গণমানুষের অবিসংবাদিত নেতা, শাসন-শোষণ-ত্রাসনের মুক্তিদূত আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলার প্রধান আসামি কারারুদ্ধ শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে ৬ দফাভিত্তিক স্বাধিকার আন্দোলন তুঙ্গে উঠে। তুমুল গণআন্দোলন ও ছাত্র আন্দোলনের প্রবল প্রবাহে সূচিত গণঅভ্যুত্থানে সামারিক স্বৈরাচার আইয়ুব শাহীর পতন ঘটে। শেখ মুজিব করামুক্ত হন। ছাত্র জনতা তাকে বঙ্গবন্ধু উপাধিতে ভ‚ষিত করে। ১৯৭০ সালের সাধারণ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের মানুষের অনন্য বিজয় সত্তে¡ও পাকিস্তানী স্বৈরশাসক কর্তৃক আওয়ামীলীগের নির্বাচিত গণপরিষদ সদস্যদের সমন্বয়ে সরকার গঠন করতে না দেয়ার পরিণতিতে শুরু হয় মহান মুক্তিযুদ্ধ। নয় মাসব্যাপী চলমান এ সর্বপ্লাবী যুদ্ধে গৌরবময় বিজয় অর্জনের পর ১৯৭৩ সালের ১৩ ফেব্রæয়ারি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে আসেন। ঐ দিন বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র সমাজের  সহসভাপতি মোঃ নজিবর রহমান ও  সাধারণ সম্পাদক মোঃ আব্দুর রাজ্জাক বর্তমান মাননীয় মন্ত্রী কৃষি মন্ত্রণালয়, গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার নেতৃত্বে পরিচালিত তৎকালীন  কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের নেতৃবৃন্দ স্বাধীন বাংলাদেশের  প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানে কাছে কৃষি গ্রাজুয়েটদের সরকারি চাকরিতে প্রবেশপদে প্রথম শ্রেণির মর্যাদা এবং টেকনিক্যাল পে প্রদানের দাবি জানালে জাতির জনক তা  প্রসন্নচিত্তে মেনে নেন এবং অচিরেই সরকারি প্রজ্ঞাপন জারির মধ্য দিয়ে তা বাস্তবায়ন করেন। এই ঐতিহাসিক অর্জনের স্মৃতিময় ১৩ ফেব্রæয়ারি দিনটি কৃষিবিদ সমাজের জন্য এক গৌরবদীপ্ত দিন, স্মৃতির মনিকোঠায় অক্ষয়, অবিস্মরণীয়, এক স্বর্ণজ্জ্বোল দিন।


এই অর্জনের দীর্ঘকাল পরে ২০১১-১২ মেয়াদে কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশন বাংলাদেশ এর কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটি ১৩ ফেব্রæয়ারি দিনটি প্রতি বছর কৃষিবিদ দিবস হিসেবে পালনের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে। এই সিদ্ধান্তের আলোকে ২০১২ সাল থেকে কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশন বাংলাদেশ ১৩ ফেব্রæয়ারি দিনটি মর্যাদার সাথে নানা আয়োজনের মধ্য দিয়ে ‘কৃষিবিদ দিবস’ হিসাবে পালন করে আসছে।  


কৃষি ক্ষেত্রে অর্জন : কৃষিবিদদের অবদান
পলিবিধৌত গাঙ্গেয় ব-দ্বীপ পরিচয়ে খ্যাত কৃষি প্রধান আমাদের এই প্রিয় মাতৃভ‚মি বৃটিশ ও পাকিস্তানী ঔপনিবেশিক শাসনামলে দুর্ভিক্ষ মহামারীর করাল গ্রাসে পতিত হয়েছে বার বার। প্রাণহানি ঘটেছে লক্ষ লক্ষ মানুষের। সিংহভাগ মানুষ প্রজন্ম ধরে দারিদ্র সীমার নিচে বাস করতে বাধ্য হয়েছে। ঐ সময়ের কৃষিকে নিতান্তই নিয়তি নির্ভর মানধাত্মার আমলের পারিবারিক অভিজ্ঞতাভিত্তিক খোরপোষমুখী কৃষি ব্যবস্থা হিসেবে গণ্য করা হতো।


১৯৩৮ সালে ঢাকার তেজগাঁয়ে কৃষি কলেজ এবং ১৯৬১ সালে ময়মনসিংহে পূর্ব পাকিস্তান কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার সুবাদে এ দেশে সীমিত পরিসরে উচ্চতর কৃষি শিক্ষার সুযোগ সৃষ্টি হয় এবং  জ্ঞান ও প্রযুক্তিনির্ভর কৃষির প্রবর্তন ঘটে। এ সময়ে ধীরে ধীরে  সরকারি পর্যায়ে কৃষি শিক্ষা, গবেষণা ও সম্প্রসারণ সেবা বিস্তারের কর্মসূচি চালু হয়। যা মূলত খোরপোষমুখী সনাতন কৃষি ব্যবস্থার আধুনিক রূপান্তরের প্রাথমিক প্রণোদনা হিসেবে কাজ করে। কথিত ৫৮ হাজার গ্রাম আর ৫৬ হাজার বর্গমাইলের এই দেশে স্বাধীনতা লাভের বছর কালে অর্থাৎ ১৯৭১ সালে সাড়ে সাত কোটি জনসংখ্যার শতকরা ৮০ ভাগ গ্রামে বাস করতে এবং তারা শতভাগ কৃষির উপর নির্ভরশীল ছিল। মূলত প্রকৃতি নির্ভর ফসল চাষই ছিল কৃষকদের মূল পেশা। ধান, পাট, সীমিত পরিসরে ডাল, রবিশস্য, আখ ইত্যাদি ছিল চাষাবাদের আওতায়। সবজি, ফল বা মসলা জাতীয় ফসলের বাণিজ্যিক আবাদ ছিল প্রয়োজনের তুলনায় অত্যন্ত কম। সচ্ছল কৃষক পরিবারগুলোও প্রধানত মাটির দেয়াল দেয়া ছনের বা টিনের ঘরে বাস করতেন। সারা বছর জামা গায় দেয়া ও সবসময় জুতা স্যান্ডেল পরার সামর্থ্য তাদের ছিল না।


কিন্তু দেশ স্বাধীন হওয়ার পর বাঙালি জাতির চিরাআরাধ্য মহানায়ক কৃষক সন্তান সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙ্গালি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সর্বপ্রথম সর্বাধিক গুরুত্ব দিয়ে এ দেশের কৃষক সমাজের কল্যাণ সাধনে আত্মনিয়োগ করেন। কৃষিকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়ে প্রণয়ন করেন রাষ্ট্রীয় পরিকল্পনা। আধুনিক কৃষিকে ধারণ ও লালন করার যোগ্য কাঠামো-অবকাঠামো তৈরিতে মনোযোগী হন। কৃষিশিক্ষা, গবেষণা, সম্প্রসারণ ও উপকরণ বিতরণ কার্যক্রম সুচারুভাবে পরিচালনার জন্য বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলার আয়োজন করেন। এ সময় বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিল, উদ্যান উন্নয়ন বোর্ড, বীজ প্রত্যয়ন এজেন্সি, বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন প্রতিষ্ঠান ইত্যাদির সৃষ্টি হয়। আধুনিকায়ন হয় কৃষি গবেষণা প্রতিষ্ঠান, পাট গবেষণা প্রতিষ্ঠান ও ধান গবেষণা প্রতিষ্ঠানের। মৎস্য ও পশু সম্পদ ও চা উন্নয়ন ক্ষেত্রেও নতুন নতুন উন্নয়ন প্রকল্প গৃহীত হয়। কৃষি গ্রাজুয়েটদের সরকারি চাকরিতে প্রবেশ পদে প্রথম শ্রেণির মর্যাদা দান এসব প্রতিষ্ঠানগুলোতে মেধাবী জনবলের জোগান দেয়- যা জাতির জনকের দূরদৃষ্টিপ্রসূত উন্নয়ন ভাবনারই একটি উজ্জ্বল দিক। কৃষিবিদদের প্রথম শ্রেণির মর্যাদা ঘোষণা কালে তিনি বলেছিলেন, ‘আন্দোলন করছিস বলে আমি দাবি মেনে নিলাম তা নয়, আমি চাই ভালো ছাত্রছাত্রী কৃষি পড়–ক’  আমি তোদের দাবি মেনে নিলাম তোরা আমার মুখ রাখিস।’


কৃষিবিদ সমাজ তাদের প্রতিভা, মেধা ও কর্মদক্ষতা, সর্বোচ্চ অঙ্গীকার ও আন্তরিকতার সাথে প্রয়োগ করে জাতির জনকের প্রত্যাশা পূরণে ব্রতী হন। সেই থেকে এদেশের কৃষিবিদগণ বিভিন্ন ফসলের শত শত জাত উদ্ভাবন ও প্রবর্তন এবং উন্নত চাষ প্রযুক্তি উদ্ভাবন ও প্রয়োগ অব্যাহত রেখেছেন। আর সেই কারণেই বাংলাদেশের ক্রমহ্রাসমান জমি থেকে ২০১৯  সালে প্রায় ১৭ কোটি জনগণের জন্য ৪ কোটি ৬০ মেট্রিক টন দানা জাতীয় খাদ্য শস্য উৎপাদন করা সম্ভব হয়েছে। এদেশে প্রতি বছরে ঘটিত মরা কার্তিকের অনটন কেটে গেছে। প্ররাভূত হয়েছে উত্তরাঞ্চলের মঙ্গাও। আজ এদেশের প্রতি ইঞ্চি জমি ভরে উঠেছে ফসলের বৈচিত্র্যে। শত শত উচ্চফলনশীল ফসল সংযুক্ত হয়েছে শস্য বিন্যাসে। সবজি, ফল ও মসলা উৎপাদনেও বিপুল অগ্রগতি হয়েছে। শস্যের গড় নিবিড়তা শতকরা ২০০ ভাগ ছুঁই ছুঁই করছে। কৃষি ক্ষেত্রে লাগাতরভাবে উচ্চ প্রবৃদ্ধি অর্জিত হচ্ছে। প্রাকৃতিক বৈরিতার সাথে খাপ খাওয়ানোর উপযোগী কৃষি প্রযুক্তি কৃষি উৎপাদন কৌশল প্রবর্তনে কৃষক ও কৃষিবিদ সমাজ কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে কাজ করে যাচ্ছেন। একই ভাবে প্রাণিসম্পদ ও মৎস খাতেও প্রভ‚ত উন্নতি হয়েছে। গ্রামে গ্রামে পোলট্রি ফার্ম, গাভি পালন, গরু মোটাতাজাকরণ কার্যক্রমের মাধ্যমে পশু সম্পদের এবং পুকুর, বিল, বাওড় এবং মুক্ত জলাশয়ে মাছ চাষের কার্যক্রম বিস্তৃত হওয়ায় এ খাতে প্রভূত উন্নতি সাধিত হয়েছে। সম্প্রতি সমুদ্র জয়ের ফলে মেরিন ফিশারিজ খাতের উন্নয়নে বিপুল সম্ভাবনা সৃষ্টি হয়েছে। পাশাপাশি বসতবাড়িতে ফল ও সবজি চাষ বৃদ্ধি পাওয়ায় পারিবারিক পুষ্টির প্রাপ্যতা বেড়েছে। দেশে কৃষি শিক্ষা, গবেষণা, সম্প্রসারণ সেবা যেমন সম্প্রসারিত হচ্ছে তেমনি  প্রয়োজনীয় উন্নত প্রযুক্তি ও  মানসম্পত উপকরণের যোগানও বাড়ছে প্রতিনিয়ত। বহু সরকারি ও বেসরকারি সংস্থা এসব কাজে যুক্ত হয়েছে এসব সংস্থায় কর্মরত রয়েছেন কৃষিবিদগণ। কৃষি ব্যবস্থায় যান্ত্রিকীকরণ ও বাণিজ্যিকীকরণের ছোঁয়া লেগেছে। যা কৃষকের জীবন যাপনে এবং কৃষি ব্যবস্থায় ব্যাপক প্রভাব ফেলেছে। কৃষি পণ্যের প্রক্রিয়াজাতকরণ ও বহির্বাণিজ্য এক নুতন সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচন করেছে। এখন কৃষকের ঘরবাড়ি, পোশাক পরিচ্ছদ, শিক্ষা দীক্ষা, বিনোদনসহ জীবন যাত্রার সর্বত্রই লেগেছে আধুনিকতার ছোঁয়া। এই উজ্জ্বল অর্জনের মহানায়ক যদি হয় কৃষক তাহলে সহনায়ক নিশ্চয় এদেশের কৃষিবিদ সমাজ। এর সাথে  যুক্ত রয়েছে বঙ্গবন্ধু কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে পরিচালিত সরকারের উদার ও কৃষিবান্ধব কার্যক্রম নীতি সমর্থন। কৃষকের সহায়তায় ব্যাপক উৎপাদন প্রণোদনার কর্মদ্যোগ জাতির জনক কর্তৃক প্রথম শ্রেণির মর্যাদা প্রাপ্তির ১৩ ফেব্রæয়ারি দিনটিকে কৃষিবিদ দিবস হিসেবে পালনের তাৎপর্য এখানেই। কৃষি ক্ষেত্রে অর্জনের এই ধারা অব্যাহত রাখার জন্য কৃষিবিদদের ভ‚মিকা ভবিষ্যতে আরো শানিত ও জোরদার করার উপায় অন্বেষণ এবং সে লক্ষ্যে রাষ্ট্রীয়ভাবে ব্যাপক কর্মসূচি গ্রহণ ও তা বাস্তাবায়নের আয়োজনই হোক এ দিবস পালনের মূল অনুপ্রেরণ।


উপসংহার
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কর্র্তৃক কৃষিবিদ পেশাজীবীদের  সরকারি চাকরিতে প্রথম শ্রেণির পদমর্যাদা দেয়ার দিন থেকে  ৪৭ বছর দূরত্বে দাঁড়িয়ে আমরা জাতির পিতা ঘোষিত ঐ ঐতিহাসিক সিদ্ধান্তের তাৎপর্য পর্যালোচনা করি তা হলে সহজেই উপলব্ধি করতে পারি যে, সিদ্ধান্তটি কতটা যুগান্তকারী ও দূরদৃষ্টি সম্পন্ন ছিল। ঐ সিদ্ধান্তের প্রথম প্রত্যাশা ছিল কৃষি শিক্ষায় মেধাবী শিক্ষার্থীরা আসবে যা অক্ষরে অক্ষরে বাস্তবে রূপ নিয়েছে আর প্রধান লক্ষ্য ছিল কৃষি উৎপাদন ব্যবস্থার  খোল নলচে বদলে ফেলে এমন অগ্রগতি অর্জন করবে যা এদেশের মানুষকে ক্ষুধা থেকে মুক্তি  দেবে, দারিদ্র্য জয়ে সবচেয়ে বড় সহায়ক হবে। এদেশের সাড়ে সাত কোটি মানুষের বার্ষিক ১৯৭১ সালে গড় আয় ছিল ১৭০ ডলার যা আজ প্রায় ২০০০ ডলারে উন্নীত হয়েছে। দানা জাতীয় খাদ্য উৎপাদনে অর্জিত হয়েছে স্বনির্ভরতা। সবজি, ফল, মাছ, মাংস, ডিম, দুধসহ প্রায় সকল প্রকার কৃষি পণ্য উৎপাদনে বাংলাদেশ ঈর্ষণীয় সাফল্য অর্জন করেছে। এর বাইরে জীবনযাত্রার মানোন্নয়নের প্রায় সকল সূচকে আমাদের অগ্রযাত্রা অব্যাহত রয়েছে। এই উন্নতি অর্জনে এদেশের কৃষিবিদসমাজ নিরলসভাবে কাজ করছে, অবদান রাখছে।
আমরা এই অবদান আরো সূদৃঢ় করতে চাই, অর্থবহ করতে চাই জাতির কল্যাণে ও জনগণের জীবনযাত্রার মানোন্নয়নে। বিশেষ করে কৃষক সমাজের  সমৃদ্ধি ও মর্যাদা উন্নয়নে ও সুরক্ষায়। এই হোক মুজিব বর্ষে কৃষিবিদ দিবস উদ্যাপনের মূল প্রেরণা।
জয় বাংলা
জয় বঙ্গবন্ধু
কৃষিবিদ দিবস অর্থবহ হোক
মুজিববর্ষ সার্থক হোক

কৃষিবিদ মো: হামিদুর রহমান
সম্মানিত সদস্য, এপিএ পুল, কৃষি মন্ত্রণালয়, সাবেক মহাপরিচালক, ডিএই, মোবাইল : ০১৭১১৮০৩৬৯৫, ই-মেইল : hamidur2152@gmail.com


COVID19 Movement Pass Online Police Clearance BD Police Help line Expatriate Cell Opinion or Complaint NIS Bangladesh Police Hot Line Number Right to Information PIMS Police Cyber Support for Women BPWN Annual Training Workshop Achievement & Success PHQ Invitation Card
Press Release Recruitment Information Procurement / Tender Notice Legal Instrument Innovation Corner Detective Magazine Bangladesh Football Club Diabetes-Covid19 Exam Results Accident Info Important Forms

Apps

icon icon icon icon icon icon